| আহমদ আবদুল্লাহ |
মহাবিশ্বের বয়স কত- এই প্রশ্নটি তোমাদের মনের কোণে নিশ্চয়ই নাড়া দেয়। মহাবিশ্বের একদম সঠিক বয়স গননা মানুষের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। বজ্ঞানীরা যে আনুমানিক বয়স নির্নয় করেছে তা কতগুলো তত্ত্বের আলোকে করেছেন যেগুলো পুরোপুরি সঠিক নাও হতে পারে। আসলে মহাবিশ্বের বয়স গণনা শুরু হয়েছে বিগ ব্যাঙের (যে মহা বিস্ফোরণের মাধ্যমে মহাবিশ্বের স্থান কালের সূচনা) পর থেকে। তার আগে সময়ের অস্তিত্ব ছিল কি ছিল না তা আমাদের জানা নেই, অন্তত আমাদের কাছে পরিমাপ করার কোন হাতিয়ার নেই।
মহাবিশ্বের বয়সের ব্যাপারে সবচেয়ে সুসঙ্গত তথ্য হচ্ছে ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর বা প্রায় ১৪ বিলিয়ন তথা ১৪০০ কোটি বছর। তো কিভাবে মাপা হল মহাবিশ্বের বয়স? এর উপায় আছে দুটি। দুটোরই কৃতিত্ব বিজ্ঞানী হাবলের।
প্রথম উপায় হচ্ছে ছায়াপথ সমূহের (Galaxy) বেগ ও দূরত্ব পরিমাপের মাধ্যমে। যেহেতু ছায়াপথ সমূহ একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে (কিঞ্চিৎ ব্যতিক্রম ছাড়া) তাহলে আমরা বলতেই পারি, অতীতের কোন এক সময় এরা সবাই যুক্ত ছিল। বর্তমানে গ্যালাক্সিদের বেগ, পারস্পরিক দূরত্ব ও এর সাথে মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের হার কাজে লাগিয়ে আমরা বের করতে পারি এই অবস্থানে আসতে তাদের কত সময় লেগেছে। আর এই সময়টাই তো মহাবিশ্বের বয়স! আর এভাবে উত্তরটা পাওয়া গেছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর।
মহাবিশ্বের বয়স বের করার আরেকটি উপায় হল সবচেয়ে প্রাচীন নক্ষত্রপুঞ্জগুলোর (star clusters) বয়স বের করা। কারণ, মহাবিশ্ব এতে অবস্থিত কোন জ্যোতিষ্কের বা নক্ষত্রের চেয়ে কম বয়সী হতে পারে না। পারে কি? আমাদের ছায়াপথ মিল্কিওয়েকে প্রদক্ষিণরত বটিকাকার (Globular) নক্ষত্রপুঞ্জগুলো এখন পর্যন্ত আমাদের খুঁজে পাওয়া প্রাচীনতম বস্তু। এসব নক্ষত্রপুঞ্জে অবস্থিত তারকাগুলোর (Star) ব্যাপক বিশ্লেষণে তাদের বয়স পাওয়া গেছে প্রায় ১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন বছর।
এই দুই প্রক্রিয়ার মিল আমাদেরকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী করেছে যে আমরা তাহলে মনে হয় মহাবিশ্বের সঠিক বয়স জেনে ফেলেছি!
No Comment