।মুশফিকুর রহমান।
মহান আল্লাহ আমাদের চারপাশে এমন সব প্রয়োজনীয় ও আশ্চর্য জিনিস তৈরি করে রেখেছেন, যার সদ্ব্যবহার জানতে পারলে আমাদের জীবনযাত্রা আরো সুন্দর ও সহজ করা সম্ভব। বিজ্ঞানের কাজ সৃষ্টিকর্তার এই সৃষ্টির রহস্য উন্মোচন করা। তেমনি একটি ঘটনা ১৭৮৯ সালে ঘটেছিল।
পৃথিবীতে শক্তির স্বল্পতায় যখন মানুষ চিন্তিত, ঠিক তখনই বিজ্ঞানী মার্টিন হেনরিখ ক্ল্যাপরথ (1743-1817) ইউরেনিয়াম আবিষ্কার করেন। তিনি ইউরেনাস গ্রহের নামানুসারে এর নামকরণ করেন। কিন্তু প্রথম ইউরেনিয়াম সংগ্রহ করা হয় ১৮৪১ সালে।
এই বছর বিজ্ঞানী ইউজিন পেলিকট (Eugene-Melchior Peligot 1811-1890) ইউরেনিয়াম টেট্রাক্লোরাইড (UCl4) থেকে প্রথম ইউরেনিয়াম (U) সংগ্রহ করেন। ১৮৬৯ সালে যখন দিমিত্রি মেন্ডেলিভ (Dmitri Ivanovich Mendeleev 1834-1907) পর্যায় সারণী আবিষ্কার করেন তখন ইউরেনিয়াম(U) সবচেয়ে ভারী মৌল হিসেবে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
১৮৯৬ সালে বিজ্ঞানী হেনরি বেকেরেল (Antoine Henri Becquerel 1852-1908) ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কার করেন।
চিত্র-১: বিজ্ঞানী মার্টিন হেনরিখ ক্ল্যাপরথ
বন্ধুরা, এবার পারমাণবিক শক্তি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেওয়া যাক।
আমরা জানি প্রত্যেক পদার্থ পরমাণু নামক অসংখ্য অতি ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। সব মৌলের পরমাণুতে থাকে ইলেকট্টন, প্রোটন এবং নিউট্রন। নিউট্রন ও প্রোটন পরমাণুর কেন্দ্র নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে। আর ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের বাইরে অবস্থান করে।
পরমাণু সামগ্রিক ভাবে কোন চার্জযুক্ত থাকে না। নিউট্রন চার্জবিহীন, তাই পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের সংখ্যা সমান সমান থাকে। কেননা, প্রোটন ও ইলেকট্রনের আধান বিপরীতধর্মী।
একই মৌলের বিভিন্ন পরমাণুর কয়েক প্রকারের ভর হতে পারে (ভর = প্রোটন ও নিউট্রনের সর্বমোট সংখ্যা)। যে সব পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন হয়, সে সব পরমাণুকে পরস্পরের আইসোটোপ বলা হয়। অর্থাৎ নিউট্রনের সংখ্যার তারতম্যের জন্যই আইসোটোপের সৃষ্টি।
একই মৌলের সব আইসোটোপের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম একই থাকে। কিছু পরমাণুতে থেকে যে প্রতিভাসের সৃষ্টি হয় তার নাম তেজস্ক্রিয়তা। ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, প্লুটোনিয়াম ইত্যাদি তেজস্ক্রিয় পদার্থ।
পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে ভেঙ্গে বা বিভাজন করে যে শক্তি পাওয়া যায় তাকে পারমাণবিক শক্তি বলে। ১৯০৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein 1879-1955) প্রমাণ করেন যে, পদার্থ ও শক্তি প্রকৃতপক্ষে অভিন্ন অর্থাৎ পদার্থকে শক্তিতে রূপান্তরিত করা যায় এবং শক্তিকে রূপান্তরিত করা যায় পদার্থতে।
m ভরবিশিষ্ট কোন পদার্থকে শক্তিতে রূপান্তরিত করলে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তার পরিমাণ E=mc², এখানে c=আলোকের বেগ (300,000 km/sec) ।
চিত্র-৩: পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম বিখ্যাত সমীকরণ
আর ফিশনের (Fission) মূল হচ্ছে বিভাজন। একটি ভারী পরমাণুকে দ্রুতগামী নিউট্রন দ্বারা ভেঙ্গে হালকা ভরের একাধিক পরমাণু ও শক্তি উৎপন্ন করা হয়। এই প্রক্রিয়াকে কাজে লাগানো হয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে (Nuclear Power Plant) ।
যে সকল তেজস্ক্রিয় পদার্থ এই ফিশন বিক্রিয়ায় অংশ নেয় তাদের ফিসাইল পদার্থ বা পারমাণবিক জ্বালানি বলা হয়। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় ইউরেনিয়াম-২৩৫ আইসোটোপ। মজার ব্যাপার হচ্ছে তেজস্ক্রিয় কিছু আইসোটোপ আছে যেগুলো বিশেষ অবস্থায় নিজেরাই নিজেদের পরমাণুকে ভেঙ্গে তাপশক্তি বিকিরণ করে।
ইউরেনিয়াম (Uranium) ২৩৫ পরমাণুর নিউক্লিয়াসে ৯২টি প্রোটন ও ১৪৩টি নিউট্রন আছে। এর পরমাণুতে বাহির থেকে একটি নিউট্রন ঢুকিয়ে দিলে আইসোটোপ ইউরেনিয়াম (Uranium) ২৩৬-এ পরিণত হবে। এই আইসোটোপটি নিজের অস্তিত্ব বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারে না।
তাই এর পরমাণুটি ভেঙ্গে দুটি পরমাণুতে পরিণত হয়। ভেঙ্গে যাওয়ার সময় পরমাণুটি প্রচুর তাপশক্তি উৎপন্ন করে দুটি অতিরিক্ত নিউট্রনকে মুক্ত করে দেয়। মুক্ত নিউট্রন দু’টি আবার ইউরেনিয়ামের নতুন দু’টি পরমাণুকে ভেঙ্গে প্রচুর তাপশক্তি উৎপন্ন করে চারটি নিউট্রনকে মুক্ত করে দেবে।
এইভাবে চলতে থাকে, যতক্ষণ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম-২৩৫ এর অস্তিত্ব থাকবে। এই ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়াকে বলা হয় চেইন রিঅ্যাকশন।
বিগত সংখ্যায় আমরা তড়িৎ উৎপাদনের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনেছি। মূলত, সৌরতড়িৎ ছাড়া বাকি সব তড়িৎ উৎপাদনের পদ্ধতি একই। অর্থাৎ যেকোন শক্তি দিয়ে জেনারেটরকে ঘুরাতে পারলেই আমরা তড়িৎ পাব।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে পারমাণবিক শক্তিকে ব্যবহার করে তাপ উৎপন্ন করা হয়। তা দিয়ে পানিকে বাষ্প করে টারবাইন এর মাধ্যমে জেনারেটরকে সচল করা হয়। যেমনটি আমরা পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রে জেনেছি।
যে চেম্বারে নিউক্লিয়ার ফিশন করা হবে বা পোড়ানো হবে তাকে রিয়েক্টর বলে। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রিতভাবে রিঅ্যাকশন বা বিক্রিয়া সংঘটিত হয়।
এভাবে এই বিক্রিয়া চলতেই থাকে এবং প্রচুর পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়। নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে এটা চেইন রিঅ্যাকশনে পরিণত হতে পারে। এই ফিশন বিক্রিয়ার ফলে কিছু ভর হারিয়ে যায়। বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের সূত্র অনুসারে হারিয়ে যাওয়া ভর শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
ফিশন বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে এই শক্তির পরিমাণ ২০ কোটি ইলেকট্রন ভোল্ট-ইভি। ১ গ্রাম ইউ-২৩৫-এর সব কয়টি নিউক্লিয়াস ফিশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙে ফেলা হলে প্রায় ২৪ মেগাওয়াট-ঘণ্টা শক্তি পাওয়া যায়। এ পরিমাণ শক্তি পেতে হলে প্রায় দুই হাজার ৬০০ কেজি কয়লা পোড়াতে হবে।
এবার এসো পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কীভাবে কাজ কাজ করে জেনে নেই। চিত্রে লক্ষ কর, রিয়েক্টরের মধ্যে জ্বালানি (ইউরেনিয়াম দণ্ড) থাকে। বিক্রিয়া শুরু হলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়। বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য কন্ট্রোল রড ব্যবহার করা হয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লিতে (Reactor) ইউরেনিয়ামের রডগুলো বিশেষভাবে সজ্জিত থাকে। চুল্লিগুলো বিভিন্ন ধাপে খুব শক্ত ও প্রশস্ত কংক্রিট দিয়ে তৈরি করা হয় যাতে তেজস্ক্রিয়তা বাহিরে আসতে না পারে। ফিশনের পরিমাণ তথা চেইন রিঅ্যাকশনকে নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্যডমিয়াম (Cadmium) দিয়ে নির্মিত নিয়ন্ত্রক রড ব্যবহার করা হয়।
কারণ ক্যডমিয়াম (Cadmium) মুক্ত নিউট্রনকে সহজেই চুষে নেয়। চুল্লির তাপমাত্রাকে কমাতে বা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় ধরে রাখতে নিয়ন্ত্রক পাইপ দিয়ে ইউরোনিয়াম রডকে ঢেকে দেওয়া হয়। আর সম্পূর্ণ রিয়েক্টরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যবহার করা হয় পানি।
রিয়েক্টরের তাপে এই পানি বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প দিয়েই টারবাইনের সাহায্যে জেনারেটর চালিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। মূলত তাপকে কাজে লাগিয়ে পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হয়। এর পর এই বাষ্পকে প্রবাহিত করে টারবাইনের সাহায্যে জেনারেটর ঘুড়িয়ে তড়িৎ উৎপাদন করা হয়।
দক্ষতা বৃদ্ধি ও খরচ কমানোর জন্য টারবাইনে ব্যবহারের পর বাষ্পকে বায়ুমণ্ডলে ছেড়ে না দিয়ে তা রিসাইকেল করা হয়। কন্ডেন্সার দিয়ে বাষ্পকে ঠান্ডা করে পানিতে রূপান্তরিত করা হয়। এর পর এই পানি আবার রিয়েক্টরে প্রেরণ করা হয়।
বার বার রিসাইকেলের ফলে কিছু পানি ঘাটতি হয়। মেকাপ ট্যাংকে থাকা পানি দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা হয়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় এর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পারমাণবিক শক্তি যেমন শক্তিশালী তেমন ভয়াবহ। চেরনোবিল আর ফুকুশিমা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঘটনার ভয়াবহতা বিশ্ববাসী অবগত। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রিয়েক্টরের প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয়।
এই তাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে তাপশক্তি বৃদ্ধি পেয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে (যেমন নিউক্লিয়ার বোমা) । কারণ পারমাণবিক বিক্রিয়া হঠাৎ করে সম্পূর্ণ থামিয়ে দেয়া যায় না। কোন কারণে রিয়েক্টর বন্ধ করে দিলেও কয়েকদিন পর্যন্ত রিয়েক্টরের ভেতর উচ্চ তাপমাত্রা থাকে।
তাই রিয়েক্টর বন্ধ করে দিলেও পাম্প চালিয়ে রিয়েক্টরে পানির প্রবাহ সচল রাখা হয়। এই পানির প্রবাহ যদি কোন ভাবে বন্ধ হয়ে যায়, তবে রিয়েক্টরের তাপমাত্রা কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না, ফলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটবে।
সাম্প্রতিক কালে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক চুল্লি একই সাথে প্রচন্ড ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার কারণে বিকল্প পাম্পগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চুল্লিতে পানি সরবরাহ সচল রাখা সম্ভব হয়নি।
যার ফলে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে বিস্ফোরণ ঘটে। তাই অতান্ত সতর্কতার সাথে পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করা হয়। কোন কারণে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়লে (Radioactive Fallout) এর সীমানার ভেতর যে অঞ্চল বিস্ফোরণ স্থলের যত কাছে হবে সেখানে তেজস্ক্রিয় দূষণের মাত্রা ও প্রভাব তত বেশি হবে।
বিস্ফোরণস্থলের কাছাকাছি এলাকায় তুলনামূলক বেশি তেজস্ক্রিয় দূষণের ফলে সেখানে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের সংস্পর্শে আসা মানুষদের চুল পড়ে যাওয়া, রক্তের শ্বেতকণিকা কমে যাওয়া, থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি অসুস্থতা দেখা দেয়।
শ্বেতকণিকা কমে যাওয়ায় ফ্লু জাতীয় রোগে মানুষ সহজেই আক্রান্ত হয়ে পরে। এছাড়া শরীরের তেজস্ক্রিয় দূষণে দূষিত অংশের কোষ এর কার্যকারিতা ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফলে টিউমার ও ক্যান্সার এর উৎপত্তি ঘটতে পারে।
পারমাণবিক বিস্ফোরণের সাথে সাথে যে বিকিরণ নির্গত হয় সেটি মূলত গামা রশ্মি, নিউট্রন এবং আয়নাইজড বস্তুকণার বিকিরণ। যতক্ষণ বিস্ফোরকের পারমাণবিক বিক্রিয়া চলে এই বিকিরণ ততক্ষণ স্থায়ী হয়। অগ্নিকুণ্ডের দ্বিগুণ ব্যাসের বৃত্তাকার অংশে প্রাণঘাতী এই মাত্রাতিরিক্ত বিকিরণ আঘাত হানে। এই পরিমাণের বিকিরণে আক্রান্ত মানুষ কয়েক ঘণ্টা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে মারা যায়।
পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্ঘটনার কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও সম্ভাব্য বিপর্যয়কে পরিমাপ করার জন্য যে স্কেল ব্যবহার হয় তাকে সংক্ষেপে INES স্কেল বলা হয়। এর প্রণেতা হচ্ছে International Atomic Energy Agency (IAEA)।
নানা ঝুঁকির পরেও পৃথিবীতে শক্তির চাহিদা পুরণের জন্য এর ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাথমিক স্থাপনার খরচ বেশি। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী ও পরবর্তী ব্যয় তুলনামূলক অনেক কম।
বর্তমানে পৃথিবীর ৩০টি দেশে ৪৪৯টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। সেগুলো থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমাণ মোট উৎপন্ন বিদ্যুতের প্রায় ১২ শতাংশ। ১৪টি দেশে আরও ৬৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণাধীন রয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ ২৭টি দেশে ১৭৩টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রক্রিয়া চলছে।
এগুলোর মধ্যে ৩০টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নির্মাণ করা হবে পরমাণু বিশ্বে নবাগত দেশসমূহে, যার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
বাংলাদেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রথম প্রস্তাব করা হয় ১৯৬১ সালে পাকিস্তান আমলে। এ সময় তৎকালীন সরকার ২৫৩.৯০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। ঐ সরকার বেশ কিছু পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১৯৬৩ সালে পাবনার রূপপুরে ৭০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিল।
এরপর ২৫ ডিসেম্বর ২০১৫ সালে পাবনার রূপপুরে দুই হাজার চারশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করার জন্য রাশিয়ার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। চুক্তি বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছে সাত বছর।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালের অক্টোবরে দ্বিতীয় ইউনিটের উৎপাদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির মেয়াদকাল হবে ষাট বছর। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় বিপদের ঝুঁকি কিছুটা বেশি। তারপরেও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সহকারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
বন্ধুরা, আজ এ পর্যন্তই। ভালো থেকো, আবার দেখা হবে ইনশাআল্লাহ।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ২০১৮। বর্ষ ৪। সংখ্যা ৩
No Comment